নিজস্ব সংবাদদাতা , দুর্গাপুর : দুর্গাপুরের শোভাপুরে আই কিউ সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। এক সদ্যোজাতকের বিরল থেকে বিরলতম রোগের ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচার করল স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে সম্পুর্ন নিখরচায়। দম্পতির আয়ত্বের বাইরে আনুমানিক ৪ লক্ষ টাকার এই চিকিৎসা সম্ভব হল রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সৌজন্যে। আপাতত সুস্থ নবজাতক , হাসি ফুটেছে বাবা-মা সহ ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মন্ডলীর। ধানবাদের চিরকুন্ডার বাসিন্দা নবীন কুমার ঠাকুর ও আসানসোলের গোপালপুরের বাসিন্দা কিরন ঠাকুর স্বামী স্ত্রী। কিরন গর্ভবতী হওয়ার ৮ মাসের মাথায় সিজার হয়ে পুত্রসন্তান জন্মলাভ করে। কিন্তু তারপরেই ওই দম্পতি জানতে পারে যে তাদের সদ্যজাত সন্তান এক বিরলতম রোগের শিকার , ডাক্তারী পরিভাষায় যার নাম “এনকেফেলোসি”। গড় প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে এক জনের এই রোগ দেখা যায়। এরপর এক বন্ধুর মাধ্যমে দুর্গাপুরের আই কিউ সিটি হাসপাতালের শিশু শল্য চিকিৎসক ডা: চন্দ্রশেখর সিং এর সাথে যোগাযোগ হয়। এরপর ওই সদ্যজাতককে মায়ের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নবজাতকের বয়স যখন মাত্র ৪ দিন, তখনই এক জটিল অস্ত্রোপচারের হয়। আপাতত স্থিতিশীল, এখন বাচ্চাটির বয়স ২০ দিন। ডা: চন্দ্রশেখর সিং জানান , এনকেফেলোসি নবজাতকদের ক্ষেত্রে এক বিরলতম রোগ । জন্মানোর পর এই জাতকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মাথার পেছনে প্রায় মাথার আকারেই তরল জমে গোলাকার ধারন করেছে। তবে এই শিশুর ক্ষেত্রে ওই তরলের মধ্যে ব্রেন টিস্যু কম থাকায় চিকিৎসকদের কিছুটা হলেও সুবিধে হয়েছে। প্রায় ৩ ঘন্টা জটিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন ডা: চন্দ্রশেখর সিং ও তাঁর টিম। বেশ কয়েকদিন পর্যবেক্ষনে রাখার পর শনিবার ডা: জানান যে এই বয়সে এক নবজাতকের যা স্বাভাবিক আচরন হওয়া উচিৎ , তাই হচ্ছে,কোন অস্বাভাবিকতা নেই। তবে তিনি এও বলেন যে আগামী ৫ বছর ওই শিশুকে পর্যবেক্ষনে রাখতে হবে।